প্রতিবেদক: যুগের কথা
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন, যিনি একাধিক হত্যামামলার আসামি হিসেবে অভিযুক্ত, এখনো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদে বহাল রয়েছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত একাধিক হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ।
শেখ মনোয়ার হোসেনকে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার "ছোট ভাই" বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা এই ব্যক্তি পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাব বিস্তার করেন।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে “সরকার পতনের এক দফা দাবিতে” আয়োজিত এক মিছিলে গুলিবর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থলেই নিহত হন হাফেজ মো. সিয়াম হোসেন। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যেখানে শেখ মনোয়ার হোসেন সহ বহুজনকে আসামি করা হয়।
পরবর্তীতে, হাফেজ মো. সিয়াম হোসেন হত্যা মামলায় ১৪৩/১৪৪/১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০২/১১৪/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয় সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মমিনকে এবং শেখ মনোয়ার হোসেনকে ১৪ নম্বর আসামি হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়। মামলার নম্বর ছিল: ০৩।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠতা ও আর্থিক প্রভাবের কারণে শেখ মনোয়ার হোসেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। তিনি বর্তমানে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যদিও তার বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগ।
সিরাজগঞ্জবাসীর একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন— “একাধিক হত্যা মামলার আসামি কীভাবে এখনো একটি রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক পদে বহাল থাকতে পারেন?”
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “কোনো সন্ত্রাসী, খুনি বা মানবতাবিরোধী অপরাধী সমাজের নেতৃত্বে থাকতে পারে না। এদের রাজনীতি থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত।”
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, শেখ মনোয়ার হোসেন ক্ষমতাসীন দলের সময় "চেঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেড", "সিরাজগঞ্জ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল", এবং নিটওয়্যার শিল্পের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ একাধিক কোম্পানির নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (BKMEA)-এর সাবেক পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ মনোয়ার হোসেন বলেন, “এগুলো সব মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা। আমার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই।”
✍️ দ্রষ্টব্য (Note):
এই প্রতিবেদনটি জনস্বার্থে প্রকাশিত। এতে উল্লিখিত সব অভিযোগ যাচাইসাপেক্ষ এবং বিষয়গুলো এখনও তদন্তাধীন। কারো বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়নি — এটি শুধুমাত্র ঘটনাবলি ও স্থানীয়দের অভিমতের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন।
0 Comments